কামরুল হাসান পলাশ স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজধানীর ডেমরা থানার ৬৫ ওয়ার্ডের শান্তিবাগের বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা সামসুল হক খাঁন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক মোঃ রমজান আলী মাস্টারের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক এর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।
সূত্রমতে জানা যায়, রমজানের মাস্টারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির সংক্রান্ত বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন একটি সামাজিক সংগঠন। উক্ত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে রমজান মাস্টারের কোনাপাড়া এলাকায় ব্যাংকগুলোতে করেছেন সর্বমোট ৯টি একাউন্ট রয়েছে। উক্ত অ্যাকাউন্ট গুলোতে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার উপরে লেনদেন রয়েছে। তার বার্ষিক ইনকাম শত কোটি টাকার উপরে হলেও তিনি বাৎসরিক ১০ হাজার টাকা ইনকাম ট্যাক্স প্রদান করেন।নাম মাত্র ইনকাম ট্যাক্স দিয়ে তিনি সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। রমজান আলী মাস্টারের ডেমরা থানা এলাকায় শান্তিবাগ ও বাদশা মিয়া রোডে মোট ১৮ টি বহুতল ভবন রয়েছে। তিনি নিজেও একটি লাক্সারি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন যার মূল্য কোটি টাকার উপরে। তার বিরুদ্ধে আরো
অভিযোগ রয়েছে সামসুল হক খাঁন স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকতাকে কাজে লাগিয়ে অনেক ছাত্র ছাত্রীর অভিভাবকের কাছে তিনি বহু ফ্লাট বিক্রি করেছেন। অনেক অভিভাবক অভিযোগ করে বলেছেন তারা রমজান মাস্টার সাহেব এর কাছে ফ্ল্যাট কিনে প্রতারিত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি অ্যাপার্টমেন্ট এর ফ্ল্যাটের ক্রেতারা অভিযোগ করে বলেছেন তাদের ফ্ল্যাট এখনো রেজিস্ট্রি করে দেওয়া হচ্ছে না। তাদের কাছ থেকে সম্পূর্ণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন রমজান আলী মাস্টার।এ নিয়ে ফ্ল্যাট ক্রেতারা আছেন মহাবিপদে। অনেক ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকেরা ফ্ল্যাট কিনে প্রতারিত হয়েও প্রভাবশালী হওয়ার কারণে রমজান আলী মাস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারছেন না। দুদকে দায়ের কৃত অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে গত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সময় ৬৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন এই মাস্টার সাহেব। সেই সুবাদে তিনি তৎকালীন প্রভাবশালী গ্রেফতারকৃত ৬৫ ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুদ্দিন ভুঁইয়া সেন্টু ঘনিষ্ঠ বনে যান। তিনি আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী এমপির সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেন এবং আওয়ামী লীগের ১৫ আগস্ট সহ দলীয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অর্থ ডোনেশন করেন। জুলাই আগস্ট এর আন্দোলনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মাতুয়াইল মেডিকেল রোড, হাজী বাদশা মিয়া রোডসহ হাইওয়ে রোডের ছাএ জনতা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সন্তাসী সংগঠন ছাত্রলীগ যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাদের আন্দোলন দমাতে বিপুল অর্থ প্রদান করেন।
গত ৫ই আগস্ট এর পর তাকে ১৫ এর অধিক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র হত্যা মামলার আসামি করা হয়। কিন্তু তার ক্ষমতার জোরে প্রশাসন অসহায় হয়ে পড়ে এখন পর্যন্ত কোন মামলায় তাকে এ্যারেস্ট করা হয় নাই।
এ বিষয়ে কথা বলতে রমজান আলী মাস্টারের ব্যবহৃত ফোনে সাংবাদিক পরিচয়ে কথা বললেন তিনি বলেন সামসুল হক খাঁন স্কুল এন্ড কলেজের আমার ছাত্ররা দুর্নীতি দমন কমিশন দূদক পুলিশ সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চাকরি করেন। সুতরাং এসব অভিযোগ দায়ের করে আমার কিছুই করতে পারবে না।
রমজান আলী মাস্টার বলেন,আমি তো শুধু বিল্ডিং করি আমি কাজের মানুষ। ১৫ টি ছাত্র হত্যা মামলার আসামি হওয়ার বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন আমার ছাত্ররা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসব মামলায় আমার কিছুই হবে না।তিনি বলেন আমি ৩০ টি মসজিদ মাদ্রাসার সভাপতি এসব মাদ্রাসায় ব্যাপক অর্থ ডোনেশন করি। ডোনেশনের অর্থের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার ফ্ল্যাট বিক্রির লভ্যাংশের টাকা থেকেই ডোনেশন করি।